Dhaka , শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বোয়ালমারীতে হিরু মুন্সীর কার্বণ মিল ও সীসা কারখানা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন  সাভারে নারী উদ্যোগক্তাদের নিয়ে দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হলো টেকসই উন্নয়ন লক্ষে সেমিনার ও মেলা। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসাবে মোশাররফ হোসেন (মুশা মিয়া) কে দেখতে চায় বোয়ালমারীর জনগন মতিঝিল থানার উদ্যোগে বিশুদ্ধ পানি ও ওরস্যালাইন বিতরন  বাংলাদেশ বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদের পক্ষ থেকে ১৮ এপ্রিল রাজশাহীতে জনসভা   সিআইডির জালে মাদকের গডফাদার: স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে-স্পীকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী  সড়ক দূর্ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু এক পরিবারের ৪ জন আগামী পাঁচটা বছর আওয়ামী লীগকে ঘুমাতে দেব না- জাপা মহাসচিব বাংলাদেশ বিশ্বনেত্রী শেখ হাসিনা পরিষদের। পক্ষ থেকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা

ঈদযাত্রা কেন্দ্র করে ৩ হাজার টিকিট কালোবাজারি

টিকিট কালোবাজারি

ঢাকা: আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ট্রেনের তিন হাজার টিকিট হাতিয়ে কালোবাজারে বিক্রির পরিকল্পনা ছিল একটি চক্রের।

বাংলাদেশ রেলওয়ের অনলাইন টিকিট ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সহজ ডটকমের কর্মীই জড়িত এ চক্রে।

তাদের দেওয়া তথ্য ও সহায়তায় স্বাভাবিক সময়েও প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক টিকিট চলে যায় চক্রের হাতে। দীর্ঘ নজরদারির পর জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সহায়তায় ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্র ‘ঢালী সিন্ডিকেটের’ হোতা ও সহজ ডটকমে কর্মরত সার্ভার অপারেটরসহ নয়জনকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৩)। আটকরা হলেন- ঢালী সিন্ডিকেটের মূলহোতা মিজান ঢালী (৪৮), সোহেল ঢালী (৩০), সুমন (৩৯), জাহাঙ্গীর আলম (৪৯), শাহজালাল হোসেন (৪২), রাসেল (২৪), জয়নাল আবেদীন (৪৬), সবুর হাওলাদার (৪০), ও নিউটন বিশ্বাস (৪০)। এদের মধ্যে নিউটন সহজ ডটকমের কমলাপুর রেলস্টেশন সার্ভার রুমের সার্ভার অপারেটর। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দিবাগত রাতে রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে আটটি মোবাইল ফোন, একটি এনআইডি, একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স, কালোবাজারির বিভিন্ন আলামত এবং টিকেট বিক্রির নগদ ১১ হাজার ৪২২ টাকা জব্দ করা হয়।

যেভাবে টিকিট চলে যায় চক্রের হাতে

চক্রটিকে টিকিট পেতে তথ্য দিয়ে প্রধান সহায়তা করতেন সহজের নিউটনসহ অন্যরা। সাধারণত রেলওয়ের দুই ভাগ টিকিট জরুরি প্রয়োজনে সংরক্ষিত রাখা হয়। যাত্রা শুরুর ১২ ঘণ্টা আগে সেই টিকিটগুলোর ব্লক খুলে সাধারণদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। আবার কেউ কেউ টিকিট কাটতে গিয়ে সার্ভার জটিলতা বা মোবাইল ব্যাংকিং জটিলতায় পেমেন্ট সম্পন্ন করতে পারেন না। পাঁচ মিনিটের মধ্যে পেমেন্ট সম্পন্ন না করতে পারলে সেসব বুকিংও বাতিল হয়ে যায়।

এক্ষেত্রে সার্ভার রুম থেকে কখন টিকিট ছাড়া হচ্ছে, কখন ব্লক করা হচ্ছে, কখন ব্লক খোলা হচ্ছে, তাৎক্ষণিক তথ্যগুলো সরবরাহ করা হতো। তখনই চক্রের সদস্যরা অনলাইনে অথবা সখ্য থাকা কাউন্টারম্যানদের সহায়তায় তাদের কাছে থাকা এনআইডি দিয়ে টিকিটগুলো সংগ্রহ করে নিত।

র‍্যাব জানায়, ঈদ, পূজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিন ঘিরে মিজান ও সোহেল কারসাজির মাধ্যমে সাধারণ সময়ের তুলনায় বেশি টিকিট সংগ্রহ করত। মিজান ও সোহেল প্রতিবছর ঈদ মৌসুমে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্টেশনের সহজের কর্মচারী ও কাউন্টারম্যানদের মাধ্যমে প্রায় দুই-তিন হাজার টিকিট কালোবাজারির মাধ্যমে বিক্রি করত। তারা আসন্ন পবিত্র ঈদে আগের চেয়েও বেশি সংখ্যক টিকেট সংগ্রহের পরিকল্পনা করছিল।

সংগ্রহ করা টিকিট দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করত চক্রটি। বিক্রির টাকার অর্ধেক সহজ ও রেলওয়ে স্টেশনের টিকেট কাউন্টারম্যানরা পেতেন এবং বাকি অর্ধেক মিজান, সোহেলসহ বাকি বিক্রয়কারী ও সহযোগীদের মধ্যে ভাগাভাগি হতো। এ অর্থ কখনো তারা নগদ হাতে-হাতে বুঝিয়ে দিত, আবার কখনো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করত। সিন্ডিকেটের প্রত্যেক সদস্য অবৈধভাবে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করে প্রতি মাসে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় করত।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

বোয়ালমারীতে হিরু মুন্সীর কার্বণ মিল ও সীসা কারখানা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন 

ঈদযাত্রা কেন্দ্র করে ৩ হাজার টিকিট কালোবাজারি

Update Time : ১২:৩২:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪

ঢাকা: আসন্ন ঈদ উপলক্ষে ট্রেনের তিন হাজার টিকিট হাতিয়ে কালোবাজারে বিক্রির পরিকল্পনা ছিল একটি চক্রের।

বাংলাদেশ রেলওয়ের অনলাইন টিকিট ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা সহজ ডটকমের কর্মীই জড়িত এ চক্রে।

তাদের দেওয়া তথ্য ও সহায়তায় স্বাভাবিক সময়েও প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক টিকিট চলে যায় চক্রের হাতে। দীর্ঘ নজরদারির পর জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) সহায়তায় ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি চক্র ‘ঢালী সিন্ডিকেটের’ হোতা ও সহজ ডটকমে কর্মরত সার্ভার অপারেটরসহ নয়জনকে আটক করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব-৩)। আটকরা হলেন- ঢালী সিন্ডিকেটের মূলহোতা মিজান ঢালী (৪৮), সোহেল ঢালী (৩০), সুমন (৩৯), জাহাঙ্গীর আলম (৪৯), শাহজালাল হোসেন (৪২), রাসেল (২৪), জয়নাল আবেদীন (৪৬), সবুর হাওলাদার (৪০), ও নিউটন বিশ্বাস (৪০)। এদের মধ্যে নিউটন সহজ ডটকমের কমলাপুর রেলস্টেশন সার্ভার রুমের সার্ভার অপারেটর। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দিবাগত রাতে রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে আটটি মোবাইল ফোন, একটি এনআইডি, একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স, কালোবাজারির বিভিন্ন আলামত এবং টিকেট বিক্রির নগদ ১১ হাজার ৪২২ টাকা জব্দ করা হয়।

যেভাবে টিকিট চলে যায় চক্রের হাতে

চক্রটিকে টিকিট পেতে তথ্য দিয়ে প্রধান সহায়তা করতেন সহজের নিউটনসহ অন্যরা। সাধারণত রেলওয়ের দুই ভাগ টিকিট জরুরি প্রয়োজনে সংরক্ষিত রাখা হয়। যাত্রা শুরুর ১২ ঘণ্টা আগে সেই টিকিটগুলোর ব্লক খুলে সাধারণদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। আবার কেউ কেউ টিকিট কাটতে গিয়ে সার্ভার জটিলতা বা মোবাইল ব্যাংকিং জটিলতায় পেমেন্ট সম্পন্ন করতে পারেন না। পাঁচ মিনিটের মধ্যে পেমেন্ট সম্পন্ন না করতে পারলে সেসব বুকিংও বাতিল হয়ে যায়।

এক্ষেত্রে সার্ভার রুম থেকে কখন টিকিট ছাড়া হচ্ছে, কখন ব্লক করা হচ্ছে, কখন ব্লক খোলা হচ্ছে, তাৎক্ষণিক তথ্যগুলো সরবরাহ করা হতো। তখনই চক্রের সদস্যরা অনলাইনে অথবা সখ্য থাকা কাউন্টারম্যানদের সহায়তায় তাদের কাছে থাকা এনআইডি দিয়ে টিকিটগুলো সংগ্রহ করে নিত।

র‍্যাব জানায়, ঈদ, পূজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিন ঘিরে মিজান ও সোহেল কারসাজির মাধ্যমে সাধারণ সময়ের তুলনায় বেশি টিকিট সংগ্রহ করত। মিজান ও সোহেল প্রতিবছর ঈদ মৌসুমে দেশব্যাপী বিভিন্ন স্টেশনের সহজের কর্মচারী ও কাউন্টারম্যানদের মাধ্যমে প্রায় দুই-তিন হাজার টিকিট কালোবাজারির মাধ্যমে বিক্রি করত। তারা আসন্ন পবিত্র ঈদে আগের চেয়েও বেশি সংখ্যক টিকেট সংগ্রহের পরিকল্পনা করছিল।

সংগ্রহ করা টিকিট দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করত চক্রটি। বিক্রির টাকার অর্ধেক সহজ ও রেলওয়ে স্টেশনের টিকেট কাউন্টারম্যানরা পেতেন এবং বাকি অর্ধেক মিজান, সোহেলসহ বাকি বিক্রয়কারী ও সহযোগীদের মধ্যে ভাগাভাগি হতো। এ অর্থ কখনো তারা নগদ হাতে-হাতে বুঝিয়ে দিত, আবার কখনো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করত। সিন্ডিকেটের প্রত্যেক সদস্য অবৈধভাবে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করে প্রতি মাসে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় করত।